ফুল পাখিদের লুকোচুরি ( রাসেল আবদুর রহমান )

এই বইয়ের গল্পগুলো নিছক আনন্দ বা চিত্রকল্পের নয়। প্রতিটি গল্প আলাদা আলাদা আদলে লেখা হয়েছে বাস্তব জীবনের সাথে মিলিয়ে। গল্পগুলো শিশুদের মননে নতুন আনন্দ সঞ্চয়নের সাথে বৃদ্ধি করবে জানার কলেবর। বোধ বিকাশের বেদিকে করবে শৃঙ্খলিত। ভাবনার জমিনে রুয়ে দিবে নতুন দিগন্ত। কল্পনার সমুদ্রে জাগাবে নতুনত্বের স্বপ্নচর। চারপাশের পরিবেশকে নিজের মতন করে ভাবতে শিখাবে। মানসিক শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠতে সহায়তা করবে। অনাকাঙ্ক্ষিত কৌতূহল ও ভয়কে সহজ করে নিতে সহায়ক হবে গ্রন্থিত গল্পসমূহ। গল্পগুলো যথেষ্ট শিশুসচেতনা নিয়ে লেখা হয়েছে। কেন এই বইটি শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া প্রয়োজন সে বিষয়টা পরিষ্কার করতে পারি এভাবে- অধিকাংশ শিশুই আজ দেওয়াল বন্দি। চার দেওয়ালে বন্দি থেকে তারা ইউটিউবের একমুখী ভিডিয়ো চিত্রের কল্পকাহিনি দেখতে দেখতে তাদের ভাবনার ক্ষেত্র সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভিডিয়ো চিত্রে যেভাবে দেখানো হয় ভাবনাও সেভাবে গড়াতে থাকে। এতে একই বিষয় একাধিকভাবে ভাবার দক্ষতা কমে যায়। কিন্তু বইয়ে গল্প পড়লে সম্পূর্ণ নিজের মতো ভাবা যায়, কল্পনা করা যায়। ফলে চিন্তাশক্তিতে নতুনত্ব আসে। অন্য আর একটি কারণ হলো, শহুরে শিশুদের প্রকৃতির সাথে তেমন কোনো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি। অপরিকল্পিত নগরায়ণ বদলে দিয়েছে প্রকৃতির প্রকৃত চেহারা। আর যারা এক আধটুকু ঘুরে বেড়ান তাও কোনো না কোনো কৃত্রিম পার্ক বা রিসোর্টে। ফলে শিশুদের কাছে অচেনা থেকে যাচ্ছে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। আমাদের জীববৈচিত্র্যের প্রাণিকুলের জীবন ধারণ সম্পর্কে অধিকাংশ শিশুরা বাস্তব ধারণা অর্জনের তেমন সুযোগ পাচ্ছে না। এই বইয়ের গল্পগুলো জীববৈচিত্র্যের ধারণা জন্মানোর সাথে সাথে সেসব সম্পর্কে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলবে।